সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা নিষেধাজ্ঞা: বাংলাদেশসহ ৯টি দেশ অন্তর্ভুক্ত
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা নিষেধাজ্ঞা: বাংলাদেশসহ ৯টি দেশ অন্তর্ভুক্ত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সংযুক্ত আরব আমিরাত (UAE) সরকার আকস্মিকভাবে বাংলাদেশসহ ৯টি দেশের নাগরিকদের জন্য নতুন ভিসা ইস্যু স্থগিত করেছে। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় ভ্রমণ, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির নতুন ভিসা আবেদন গ্রহণ সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। এই সিদ্ধান্তে प्रभावित দেশগুলোর প্রবাসী এবং নতুন চাকুরিপ্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা দেশগুলো
সংযুক্ত আরব আমিরাতের এই আকস্মিক নিষেধাজ্ঞার তালিকায় বাংলাদেশ ছাড়াও আরও ৮টি দেশ রয়েছে। দেশগুলো হলো:
ভারত
পাকিস্তান
নেপাল
শ্রীলঙ্কা
আফগানিস্তান
ইয়েমেন
সোমালিয়া
সিরিয়া
নিষেধাজ্ঞার কারণ কী?
আরব আমিরাত সরকার এই ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সুস্পষ্ট আনুষ্ঠানিক কারণ জানায়নি। তবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও কূটনৈতিক সূত্রমতে, এর পেছনে একাধিক সম্ভাব্য কারণ থাকতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ, অবৈধ অভিবাসন রোধ এবং অভ্যন্তরীণ শ্রমবাজার নিয়ন্ত্রণ করার মতো বিষয়গুলো এই সিদ্ধান্তের পেছনে কাজ করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার পরই আমিরাত সরকার এই কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।
বাংলাদেশের ওপর প্রভাব
সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশের জন্য অন্যতম বৃহৎ একটি শ্রমবাজার। প্রতি বছর হাজার হাজার বাংলাদেশি নাগরিক কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে সেখানে পাড়ি জমান। নতুন ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ায় এই শ্রমবাজারে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
১. নতুন কর্মসংস্থান বন্ধ: এই সিদ্ধান্তের ফলে নতুন করে যারা আমিরাতে কাজের জন্য যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন, তাদের যাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। ২. ভ্রমণ ও পারিবারিক সাক্ষাৎ: অনেক বাংলাদেশি পরিবার আমিরাতে বাস করেন। এই নিষেধাজ্ঞার কারণে তাদের আত্মীয়স্বজনদের ভ্রমণ এবং সাক্ষাৎ বাধাগ্রস্ত হবে। ৩. অর্থনৈতিক প্রভাব: রেমিট্যান্স প্রবাহে এর একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, কারণ নতুন কর্মী পাঠানো সম্ভব না হলে দীর্ঘমেয়াদে মোট প্রবাসীর সংখ্যা কমতে থাকবে।
কাদের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য নয়?
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, যাদের কাছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বৈধ রেসিডেন্স বা এমপ্লয়মেন্ট ভিসা রয়েছে, তাদের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না। তারা আমিরাতে প্রবেশ করতে ও থাকতে পারবেন। নিষেধাজ্ঞাটি মূলত নতুন ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
পরবর্তী পদক্ষেপ ও পরামর্শ
এই পরিস্থিতিতে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলে অথবা ভিসা আবেদন করার অপেক্ষায় থাকলে নিম্নোক্ত পরামর্শগুলো অনুসরণ করার অনুরোধ করা হচ্ছে:
যেকোনো তথ্যের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের দূতাবাস বা কনস্যুলেটের অফিসিয়াল ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করুন।
কোনো দালাল বা এজেন্টের недостоверной তথ্যে বিভ্রান্ত হবেন না।
বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আবুধাবিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক নির্দেশনার দিকে নজর রাখুন।
এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা একটি অস্থায়ী পদক্ষেপ নাকি দীর্ঘমেয়াদী, সে বিষয়ে এখনো কোনো স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের সাথে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।